ইসলাম

শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত, করণীয় ও বর্জনীয়

শাবান মাস - রমজানের প্রস্তুতির মাস, আমাদের করণীয় ও বর্জনীয়

শাবান মাস ইসলামী বর্ষপঞ্জির অষ্টম মাস, যা রমজানের পূর্ববর্তী মাস হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ মাসে অধিক নফল ইবাদত করতেন এবং সাহাবীদেরও এ মাসের গুরুত্ব বোঝাতেন। শাবান মাসে বিশেষত ১৫ই শাবানের রাতকে অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ মনে করা হয়, যদিও এ বিষয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত, করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ – Ekushey Boimela 2025

শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত

১. নফল রোযার বিশেষ গুরুত্ব: উসমান ইবনে যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, “আমি আপনাকে শাবান মাসে এত বেশি রোযা রাখতে দেখি, এর কারণ কী?” তিনি উত্তরে বললেন, “এটি এমন এক মাস যা রজব ও রমজানের মাঝে পড়ে। মানুষ এ মাস সম্পর্কে গাফেল থাকে। অথচ এ মাসে মানুষের আমলসমূহ আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়, তাই আমি চাই যে, যখন আমার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হবে, তখন আমি রোযাদার থাকি।” (নাসাঈ: ২৩৫৭)

২. ১৫ শাবানের ফযীলত:

  • হাদিসে এসেছে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা ১৫ই শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।” (ইবনে মাজাহ: ১৩৯০)
  • তবে এ রাত সম্পর্কে অনেক দুর্বল ও জাল হাদিসও প্রচলিত রয়েছে, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।

শাবান মাসে করণীয়

১. নফল রোযা রাখা: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) শাবান মাসে বেশি পরিমাণে রোযা রাখতেন। তবে কেউ যদি পুরো মাস রোযা রাখতে না পারে, তাহলে কমপক্ষে কিছু দিন রোযা রাখা উত্তম। শাবান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত, করণীয় ও বর্জনীয় –

  1. তওবা ও ইস্তিগফার: শাবান মাস রমজানের প্রস্তুতির মাস, তাই এই সময়ে বেশি বেশি তওবা ও ইস্তিগফার করা উচিত।
  2. কুরআন তিলাওয়াত: রমজানের পবিত্রতা লাভের জন্য শাবান মাস থেকেই বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত শুরু করা ভালো।
  3. সাদাকা ও দান-খয়রাত: দরিদ্র ও অভাবীদের মাঝে দান-সাদকা করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।
  4. নফল নামাজ: রাতে তাহাজ্জুদ ও অন্যান্য নফল ইবাদত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শাবান মাসে বর্জনীয়

১. বেদআতি আমল: ১৫ই শাবানের রাতে বিশেষ কোনো নামাজ বা ইবাদতের হুকুম দেওয়া হয়নি। তাই বিদআত পরিহার করা জরুরি।

  1. নির্দিষ্ট কোনো উৎসব পালন: অনেকে ১৫ই শাবানকে বিশেষ উৎসব হিসেবে পালন করে, যা ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে দূরে।
  2. রমজানের প্রস্তুতি ছাড়া অলস সময় নষ্ট: রমজানের প্রস্তুতির জন্য শাবান মাস গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেকেই এ সময় গাফেল থাকে।

উপসংহার

শাবান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস, যা আমাদের জন্য রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ এনে দেয়। এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা এবং অনর্থক কাজ থেকে দূরে থাকা উচিত। আসুন, আমরা শাবান মাসকে যথাযথভাবে কাজে লাগাই এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনোনিবেশ করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *